May 3, 2024, 11:43 pm

নির্বাচন নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ এর কৌশল

সিটি নির্বাচন নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ এর কৌশল

Spread the love

লেখক: মো. হাসিব উদ্দীন চঞ্চল, সম্পাদক, বিডি সোশ্যাল নিউজ

Md. Hasib Uddin, Chief Editor, Bd Social News

মো. হাসিব উদ্দীন চঞ্চল সম্পাদক বিডি সোশ্যাল নিউজ

আসন্ন পাঁচ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনকে ঘিরে আবারও রাজনীতির মাঠ গরম হচ্ছে। বিএনপি সিটি করপোরেশনের নির্বাচনকে ‘সরকারের ফাঁদ’ হিসাবে দেখছে। আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে নিতে এ কৌশল নিয়েছে বলে মনে করছে দলটি।

কিন্তু  বরাবররে মতনই এই পাতা ‘ফাঁদে’ পা না দিয়ে ভিন্ন কৌশলে এগোতে চায় বিএনপি। সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এক দফা আন্দোলনের দিকেই মনোযোগ তাদের।

ইতোমধ্যে তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের চুড়ান্ত আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে বিশেষ বার্তা দেওয়া হয়েছে। বিএনপির একাধিক নীতিনির্ধারক এই তথ্য জানিয়েছেন।

বিএনপি যখন নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে করছে, সেই নির্বাচনের আগমুহূর্তে সিটি নির্বাচন নিয়ে দলের অনেকের প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ দলটিকে অনেকটা বিপাকে ফেলতে পারে। বর্তমান সরকারের অধীন কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার অবস্থান থেকে সরে এসে দলটি সিটি নির্বাচনে দলগতভাবে অংশ নিতে পারছে না।

তবে এর আগে স্থানীয় সরকারের কয়েকটি নির্বাচনের উদাহরণ টেনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলছেন, বর্জনের ঘোষণা দিলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নিজেদের নেতাদের ভোটে দাঁড় করানোর কৌশল এবারও নেবে বিএনপি।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বর্তমান অবৈধ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাব না। এটা দলের সিদ্ধান্ত। তাই সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। সরকারের পাতানো ফাঁদে বিএনপি পা না দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন ইতোমধ্যে। দাবি আদায়ে সামনে আন্দোলনের কর্মসূচি আসবে। আন্দোলন হবে একটাই-সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না।’

গাজীপুর,খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন করার সময় হওয়ার আগেই ভোটের তারিখ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশনে ভোট হবে। এরপর ১২ জুন খুলনা ও বরিশালে এবং ২১ জুন  রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনে ভোট হবে।

আবার এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাও এমন সময় নিতে যাচ্ছে, যখন বিএনপির আন্দোলন চলবে। ক্ষমতাসীন দল কৌশল করেই এই সময়টাতে পরীক্ষা ও নির্বাচন দিয়েছে। তারা ইচ্ছে করলে দু-তিন মাস পিছিয়ে দেওয়ারও সুযোগ ছিল বলে অভিযোগ করেন বিএনপি।

বিএনপি নেতারা  বলেন, বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনেই যাবে না বিএনপি। পাঁচটি সিটি নির্বাচনে দলীয় পদে থেকে মেয়র পদে বিএনপির কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবেও অংশ নেবে না। বিএনপির কাছে তথ্য রয়েছে-কয়েকটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ‘উকিল’ মার্কা নির্বাচন করতে চায় ক্ষমতাসীনরা। এজন্য সংশ্লিষ্ট সিটির বিএনপি নেতাদের মেয়র পদে নির্বাচন করার জন্য বিভিন্ন সংস্থা দিয়ে চাপ দেওয়া হচ্ছে। তবে খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কোনো নেতাই যাবেন না। পদে থেকে নির্বাচনে অংশ নিলে বহিষ্কার করা হবে-দলের এমন সিদ্ধান্তের কথা ইতোমধ্যে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে কাউন্সিলর পদে প্রতীক না থাকায় তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই দলের। কাউন্সিলরের বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাই। অর্থাৎ তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।

গত সিটি নির্বাচনে পাঁচ সিটিতে বিএনপির যে পাঁচজন প্রার্থী ছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্তত তিনজন এবারের নির্বাচন নিয়েও বেশ কৌতূহল দেখাচ্ছেন। এর মধ্যে সিলেটের আরিফুল হক চৌধুরী, খুলনার নজরুল ইসলাম (মঞ্জু) ও গাজীপুরের হাসান উদ্দিন সরকার অন্যতম। হাসান সরকার সরকারি দল আওয়ামী লীগকে খালি মাঠে ছেড়ে না দেওয়ার কথা বলেছেন।

নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত বিএনপি যেন পুনর্বিবেচনা করে, খুলনার নজরুল ইসলাম ইতিমধ্যে এ ধরনের অভিমত গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। আর সিলেটের আরিফুল হক দলের শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমতি নিতে লন্ডন পর্যন্ত গেছেন, ১৫ দিন ধরে এমন আলোচনা চলছে দলের ভেতরে-বাইরে। যদিও আরিফুল হক দেশে ফেরার পরও ‘রহস্য’ ভাঙেননি। তিনি নির্বাচন করবেন কি করবেন না, সেটি এখন পর্যন্ত খোলাসা হয়নি।

বিরোধী দল বিএনপি ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দুটি পক্ষকেই বড় পরীক্ষা অপেক্ষা করছে আসন্ন পাঁচ সিটি নির্বাচনকে ঘিরে। কারন এই নির্বাচনের প্রভাব পড়তে পারে জাতীয় নির্বাচনে। এখানে কারো কোন কৌশলে ভুল হলে সেই পক্ষকে বড় মাশুল দিতে হবে। পাঁচ সিটির এই নির্বাচনে বিএনপি শেষ পর্যন্ত কী কৌশল নেয়, আওয়ামী লীগ বা সরকার এবং নির্বাচন কমিশন কেমন আচরণ করে, সেদিকে দেশের ভেতরের এবং বাইরের সবার নজর থাকবে। জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায়, তা নিয়ে নানা আশঙ্কা রয়েছে নানা মহলে।

জাতীয় নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস আগে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিটি নির্বাচন। সে কারণে এই নির্বাচনের গুরুত্ব বেড়ে গেছে। এই নির্বাচন কেমন হয়, সেদিকে  দৃষ্টি থাকবে সকলের।


Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category