৪৪ তম বিসিএস প্রিলিমিনারি বাংলাদেশ বিষয়াবলী’র ব্যাখ্যাসহ সমাধান


Md. Hasib Uddin প্রকাশের সময় : মে ২৭, ২০২২, ৫:৪১ অপরাহ্ন / ১৭১
৪৪ তম বিসিএস প্রিলিমিনারি বাংলাদেশ বিষয়াবলী’র ব্যাখ্যাসহ সমাধান
Spread the love

লেখক: আশিস কুমার বাকচী, সহকারী অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ, (২৯ তম বিসিএস সাধারণ শিক্ষা )

আশিশ-কুমার৪৪ তম বিসিএস প্রিলিমিনারি বাংলাদেশ বিষয়াবলী’র ব্যাখ্যাসহ সমাধান

বাংলাদেশের সংবিধানের রক্ষক কে?

উত্তর:(গ) সুপ্রিম কোর্ট

ব্যাখ্যা:

সুপ্রিম কোর্ট হলো বাংলাদেশের  সর্বোচ্চ আদালত (অনুচ্ছেদ ৯৪)।  সুপ্রিম কোর্ট কে সংবিধানের রক্ষক বলা হয় এবং বাংলাদেশের সংবিধানের অভিভাবক ও ব্যাখ্যাকারক হলো সুপ্রিম কোর্ট । সাংবিধানিকভাবে আইনের ব্যাখ্যা প্রদান করেন সুপ্রিম কোর্ট।এছাড়া অনুচ্ছেদ ১০৭ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্ট অধস্তন আদালত এর জন্য বিধি প্রণয়ন করে থাকেন ।অনুচ্ছেদ ১০৮  অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্ট “কোর্ট অব রেকর্ড” রূপে পরিগণিত হবেন। পার্লামেন্ট কর্তৃক পাশকৃত আইন সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক হলে সুপ্রিম কোর্টের  জুডিশিয়াল রিভিউ ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন।

২; বাংলার সর্ব প্রাচীন জনপদের নাম কী?

উত্তর:(ক) পুন্ড্র

ব্যাখ্যা:

পুন্ড্র জনপদ হচ্ছে  বাংলার সবচেয়ে প্রাচীন জনপদ। এর অবস্থান উত্তরবঙ্গে । বৃহত্তর বগুড়া ,রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুরে এর অবস্থান। পুন্ড্র জনপদের উল্লেখ রয়েছে বৈদিক সাহিত্যে ।করোতোয়া  নদীর তীরে অবস্থিত এ জনপদ। পুন্ড্র জাতি পুন্ড্র জনপদ গড়ে তোলেন।পুন্ড্র জাতি কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল ।এ জনপদের রাজধানী পূন্ড্রনগর>পুন্ড্রবর্ধন>মহাস্থানগড়>বগুড়া।

৩: বাংলাদেশের বৃহত্তর ঢাকা জেলা প্রাচীনকালে কোন জনপদের অন্তর্ভুক্ত ছিল?

উত্তর 🙁গ) বঙ্গ

ব্যাখ্যা:

বঙ্গ নামের উল্লেখ সর্বপ্রথম পাওয়া যায় ঐতরেয় আরণ্যক গ্রন্থে যার প্রবক্তা/রচয়িতা-মহিদাস  ঐতরেয়। বঙ্গ জনপদের সীমা উল্লেখ করেছেন ড. নীহাররঞ্জন রায় তাঁর “বাঙালির ইতিহাস আদিপর্ব” গ্রন্থে। ঢাকা, ফরিদপুর ,বরিশাল,পটুয়াখালী নিম্ন জলাভূমি, বৃহত্তর বগুড়া, পাবনা, ময়মনসিংহ জেলার পশ্চিমাঞ্চল ,কুষ্টিয়া বৃহত্তর কুমিল্লা নোয়াখালীর কিছু অংশ, যশোর ও নদীয়া এ জনপদের অন্তর্ভুক্ত। বঙ্গ জনপদের উৎপত্তি বং নামক জাতি/উপজাতি থেকে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে কতজন মুক্তিযুদ্ধকে ‘ বীর উত্তম ‘ খেতাবে ভূষিত করা হয় ?

উত্তর: (গ) ১৭৫ জন

ব্যাখ্যা:

বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে কৃতিত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য স্বীকৃতিস্বরূপ ৪ ধরনের খেতাব প্রদান করেন। যথা:

বীরশ্রেষ্ঠ-৭ জন

বীর উত্তম-৬৮ জন

বীর বিক্রম-১৭৪ জন (পূর্বে ছিল-১৭৫ জন)

বীর প্রতীক-৪২৪ জন (পূর্বে ছিল ৪২৬ জন)

# মোট খেতাব ধারী মুক্তিযোদ্ধা=৬৭২ জন

# মোট খেতাব ধারী=৬৭৩ জন।

বি.দ্র. মুক্তিযোদ্ধা নন এমন ব্যক্তিত্ব যিনি

‘ বীর উত্তম’ খেতাব পেয়েছেন; তিনি হলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল আহমেদ ( মরণোত্তর ,২০১০)। তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করতে গিয়ে শহীদ হন।

৫; মুজিবনগর সরকারের ত্রাণ পুনর্বাসন মন্ত্রী কে ছিলেন?

উত্তর:(খ) এইচ এম কামারুজ্জামান

ব্যাখ্যা:

১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সভায় মন্ত্রীদের দপ্তর বণ্টন করা হয়। দপ্তরগুলো নিম্নরূপ :

# বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান : রাষ্ট্রপতি

# সৈয়দ নজরুল ইসলাম তাজউদ্দীন আহমদ

: উপরাষ্ট্রপতি (অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি)

# তাজউদ্দীন আহমদ: প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষা, তথ্য, সম্প্রচার ও যোগাযোগ, অর্থনৈতিক বিষয়াবলী, পরিকল্পনা বিভাগ, শিক্ষা, স্থানীয় সরকার, স্বাস্থ্য, শ্রম, সমাজকল্যাণ, সংস্থাপন ও অন্যান্য যেসব বিষয় কারো ওপর ন্যস্ত হয়নি তার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী।

# খন্দকার মোশতাক আহমদ : পররাষ্ট্র, আইন ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় ।

# এম মনসুর আলী : অর্থ, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় ।

# এ এইচ এম কামারুজ্জামান : স্বরাষ্ট্র, সরবরাহ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন ও কৃষি মন্ত্রণালয়।

৭: কোন শাসদের আমলে বাংলা ভাষাভাষী অঞ্চল বাঙ্গালা নামে পরিচিত হয়ে ওঠে?

 উত্তর: মুসলিম।

ব্যাখ্যা:

প্রাচীনকালে বাংলা ভাষাভাষী এ অঞ্চল বঙ্গ নামে পরিচিত ছিল। মুসলিম/সুলতানী  আমলে এর নাম হয় বাঙলা/বাঙ্গালাহ। মুঘল আমলে এটি ‘সুবা-ই বাঙ্গালা’ নামে পরিচিত হয় ।পর্তুগিজরা এ অঞ্চলের নাম দেন Begala ইংরেজদের আমলে নাম দেয়া হয় Bengal। ১৯৪৭  সালে দেশভাগের ইহা পূর্ববঙ্গ নামে পরিচিত হয়। ১৯৫৬ সালের সংবিধানে এর  নাম হয় পূর্ব পাকিস্তান ১৯৬৯ সালে ৫ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু এর নাম রাখেন বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল এর নাম হয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ ।

৮: বাংলার প্রথম স্বাধীন নবাব কে ছিলেন?

উত্তর: (খ ) মুর্শিদ কুলি খান

ব্যাখ্যা:

বাংলায় নবাবী শাসনের প্রতিষ্ঠাতা ও  বাংলার প্রথম স্বাধীন নবাব হলেন মুর্শিদ কুলি খান(১৭০০–১৭২৭)। ১৭০০ সালে আরঙ্গজেব মোহাম্মদ হাদীকে (মুর্শিদকুলি খান) বাংলার দেওয়ান পদে নিযুক্ত করেন ।১৭০৩ সালে  মোহাম্মদ হাদি  মুর্শিদকুলি খান উপাধি পান। আরঙ্গজেবের  মৃত্যুর পর তিনি স্বাধীন হন (১৭০৭) এবং বঙ্গদেশে একটি নবাব বংশ প্রতিষ্ঠা করেন।  ১৭১৭ সালে মুর্শিদকুলি খান বাংলার সুবাদার পদে নিযুক্ত হলে ঢাকা হতে মুর্শিদাবাদে  রাজধানী স্থানান্তরিত হয়। প্রকৃতপক্ষে ১৭১৭ সাল থেকে বাংলার স্বাধীন নবাবী বংশের আমল শুরু হয়। তিনি ১৭২২ সালে  ‘মাল জমিনী’ নামক রাজস্ব ব্যবস্থা চালু করেন।১৭২৭ সালে তিনি  মৃত্যুবরণ করেন।

চলবে ——–


Spread the love