রোদের তাপে পুড়ছে রাজশাহী


Jahid Hasan প্রকাশের সময় : জুলাই ৭, ২০২২, ১২:০৫ অপরাহ্ন / ৯২
রোদের তাপে পুড়ছে রাজশাহী
Spread the love

আজ বাংলা পঞ্জিকায় বৃহস্পতিবার, ২৩ আষাঢ়। তবে প্রকৃতি যে রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে তা দেখে বোঝার উপায় নেই আষাঢ় মাস চলছে।

রাজশাহীতে সকাল থেকেই আগুন ঝরাচ্ছে সূর্য। রোদে পুড়ছে পদ্মাপাড়ের এ শহর। সবুজ গাছপালাও যেন তপ্ত নিশ্বাস ছাড়ছে। গরমের তীব্রতায় মানুষ ও পশু-পাখিরাও হাঁসফাঁস করছে। ঘরে-বাইরে কোথাও এতটুকু যেন স্বস্তি নেই। অব্যাহত তাপপ্রবাহে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। একটু বৃষ্টি ও শীতল হাওয়ার পরশ পেতে সাধারণ মানুষ যেন ব্যাকুল হয়ে উঠেছে। কিন্তু বৃষ্টির দেখা নেই।

Screenshot 20220708 001947 01

 

বর্তমানে রাজশাহীর সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। এবার তীব্র খরায় কেটেছে ঝড়-ঝঞ্ঝার বৈশাখ। তাপদাহে কেটেছে জ্যৈষ্ঠ মাস।

বর্ষার আষাঢ়ে একই অবস্থা। দিন যায়, মাস যায় কিন্তু একই মাত্রায় তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে রাজশাহীর ওপর দিয়ে। মাঝে মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে হালকা বর্ষণ হলেও খরাপ্রবণ এলাকা রাজশাহীতে বৃষ্টির দেখা নেই।

ফলে বৃষ্টির জন্য চারিদিকে হাহাকার পড়ে গেছে। টানা তাপদাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। অসহনীয় রোদ আর গরমে স্থবিরতা নেমে এসেছে কর্মজীবনেও। বাসা, অফিস কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সবখানেই যেন গরম আর গরম। দিনের বেলায় দূরে থাক রাতেও গাছের পাতা নড়ছে না। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্মরণকালের ভয়াবহ লোডশেডিং। তাই নাকাল হয়ে পড়েছে জনজীবন।

অফিস-আদালত ও বাসা-বাড়ির আসবাবপত্র থেকে শুরু করে সব জিনিসপত্রই তেঁতে উঠছে। ভবনের ট্যাপ দিয়ে যেন ফুটন্ত পানি বের হচ্ছে। বাতাসের আর্দ্রতা বেশি থাকায় মাথার ওপরে ফ্যানটাও দিচ্ছে গরম বাতাস। ঘড়ির ঘণ্টায় সময়ের হেরফের হলেও রাজশাহীর আবহাওয়ার আর যেন তেমন কোনো হেরফের হচ্ছে না।

তীব্র তাপদাহের কারণে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালে বেড়েছে ডায়রিয়াসহ নানা রোগ-বালাইয়ে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা। বিশেষ করে হাসপাতালের তিনটি শিশু ওয়ার্ডে যেন ধাপ ফেলার জায়গা নেই। বেডে-ফ্লোরে সবখানেই গরমজনিত কারণে রোগী আর রোগী। এর পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তদের দুর্ভোগ বেড়েছে এ তীব্র গরমে। তাই এ সময় বয়বৃদ্ধ ও শিশুদের রোদে না বের হয়ে ঠাণ্ডা পরিবেশের মধ্যে থাকার জন্য বলছেন চিকিৎকরা।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রেজওয়ানুল হক জানান, গত কয়েকদিন ধরে রাজশাহীর তাপমাত্রা বাড়ছেই। মঙ্গলবার (৫ জুলাই) রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেই দিন দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে। এরপর বুধবার (৬ জুলাই) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বিকেল ৩টায় ও ৪টায় রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপামাত্রা একই ছিল। সাধারণত তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে থেকে ৩৮ ডিগ্রি হলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মাঝারি তাপপ্রবাহ ও ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র তাপপ্রবাহ বলে ধরা হয়। এছাড়া দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে উঠলে তাকে অতিতীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। ফলে রাজশাহীর ওপর দিয়ে এখন মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এর আগে গত ১৫ এপ্রিল রাজশাহীতে চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

Screenshot 20220708 001947 01

 


Spread the love