ডাকাতির প্রস্তুতির সময় আন্তঃজেলা ডাকাত চক্র ‘ঠান্ডা শামীম বাহিনী’র সর্দারসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গ্রেপ্তারকৃতরা বিভিন্ন পেশার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে মহাসড়ক ও বিভিন্ন বাসাবাড়িতে ডাকাতি করে আসছিল।
শুক্রবার (৩ জুন) রাতে সাভার থানাধীন বালিয়ারপুর মহাসড়কে ডাকাতির প্রস্তুতি নেওয়ার সময় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে বিদেশি পিস্তল, পাইপগান, ওয়ান শুটারগানসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- শামিম, আনিসুর রহমান, সালাউদ্দিন, ইখতিয়ার উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর সরকার, সজিব ইসলাম, জীবন সরকার, শ্রী স্বপন চন্দ্র রায়, মিনহাজুর ইসলাম এবং শ্রী মাধব চন্দ্র সরকার।
শনিবার (৪ জুন) র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে গ্রেপ্তারকৃতরা বিভিন্ন এলাকায় গৃহ ডাকাতি, সড়ক ডাকাতি, গাছ কেটে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে যাত্রীবাহী বাস, গরুবাহী ট্রাক, মালবাহী ট্রাক ও বিভিন্ন মালামালের গুদামে ডাকাতি করে আসছিল।’
র্যাব জানায়, ঠান্ডা শামীম বাহিনীর সদস্যরা অন্ধকার রাস্তায় ওৎ পেতে থাকত। ডাকাতি করার জন্য পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্ধারিত স্থানের নিকটবর্তী স্টেশনে ডাকাত দলের সদস্য টার্গেট করা বাস, ট্রাক অথবা মাইক্রোবাস সম্পর্কে সংকেত দিত। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের গতিবিধির উপর নজরদারি করে মূল ডাকাত দলের কাছে তথ্য সরবরাহ করত।অনুকূল সংকেত পাওয়া মাত্রই ডাকাত দলের মধ্যে গাছ কাটার দায়িত্ব প্রাপ্ত সদস্যরা দ্রুত গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে দিত। ডাকাত দলের অপর সদস্যরা বাস, ট্রাক বা মাইক্রোবাসের চালক ও যাত্রীদের অস্ত্র প্রদর্শন করে ভয়ভীতি দেখিয়ে সর্বস্ব লুটে নিয়ে পালিয়ে যেত। যেখানে গাছ কাটার সুযোগ থাকত না সেখানে তারা চালকের চোখে আলো ফেলে গাড়ি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডাকাতি করত।
এসব ডাকাতির ঘটনায় শামীম ও আনিসুরকে একাধিকবার গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। জেলহাজতে থাকার সময় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের অপরাধীদের সঙ্গে তাদের সখ্যতা গড়ে উঠে। পরবর্তীতে জামিনে বের হয়ে তারা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে ডাকাত বাহিনী গড়ে তোলে। বর্তমানে তাদের বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ২৫ জন।
এছাড়া, তারা যে এলাকায় ডাকাতির পরিকল্পনা করত- ওই এলাকার ডাকাত, মাদক ব্যবসায়ী ছাড়াও পরিবহন শ্রমিক, গোডাউনের কর্মচারী, নৈশপ্রহরীদের সঙ্গে যোগসাজশে পরিকল্পনা করত। ডাকাতিই তাদের মূল পেশা।গ্রেপ্তারকৃত সালাউদ্দিন ডাকাতির পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করত। পরবর্তীতে সার্বিক বিচার বিবেচনা করে আনিসুর, শামীম এবং সালাউদ্দিন একত্রে বসে ডাকাতির মূল পরিকল্পনা করতেন।
কোথায়, কখন ও কিভাবে ডাকাতি করা হবে। ডাকাতির তথ্য সংগ্রহের জন্য কাকে নিয়োগ করা হবে, ডাকাতি সম্পন্ন করা হবে কিভাবে। ডাকাতি করা মালামাল পরিবহন, সংরক্ষণ ও কার কাছে বিক্রি করে অর্থ আদায় করা হবে সব কিছুই পরিকল্পনা করা হতো।
আপনার মতামত লিখুন :