বাংলা সাহিত্য বিষয়ক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (চর্যাপদ)


Md. Hasib Uddin প্রকাশের সময় : জুন ১৫, ২০১৯, ৪:০২ পূর্বাহ্ন / ৩৯৩০
বাংলা সাহিত্য বিষয়ক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (চর্যাপদ)
Spread the love

১। প্রঃ চর্যাপদ কি?

উঃ চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম সাহিত্যিক নিদর্শন। এটি বৌদ্ধসহজিয়া অর্থাৎ তান্ত্রিকদের ধর্মীয় গানের বই।

২।           প্রঃ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগের একমাত্র সাহিত্যিক নিদর্শন কি?

উঃ চর্যাচর্যবিনিশ্চয় বা চর্যাগীতিকোষ বা চর্যাপদ।

৩।          প্রঃ চর্যাপদ কিসের সংকলন ও কোন ছন্দে লেখা?

উঃ চর্যাপদ বৌদ্ধ ধর্মীয় গানের সংকলন গ্রন্থ এবং মাত্রাবৃত্ত ছন্দে লেখা।

৪।           প্রঃ চর্যাপদ লেখার উদ্দেশ্য কি?

উঃ নিছক কাব্য চর্চা করার জন্য চর্যাপদ লেখা হয়নি। এটি লেখা হয়েছে বৌদ্ধ সহজিয়া পন্থীদের সাধন সঙ্গীত হিসাবে গান করার জন্য।

৫।          প্রঃ চর্যাপদের রচনাকাল কত?

উঃ চর্যাপদের রচনাকাল নিয়ে সাহিত্য ইতিহাস রচয়িতাগণ বিভিন্ন মতবাদ দিয়েছেন। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্র মতে এর রচনাকাল ৬৫০ খ্রিঃ থেকে ১২০০খ্রিঃ পর্যন্ত। তবে সুনীতিকুমার চট্রোপাধ্যায়ের মতে ৯৫০ থেকে ১২০০খ্রিষ্ট্রাব্দের মধ্যে পদগুলো রচিত হয়।

৬।          প্রঃ চর্যাপদের আবিস্কারক কে?

উঃ মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী।

৭।           প্রঃ কোথা থেকে, কত সালে চর্যাপদ আবিস্কার করা হয়?

উঃ নেপালের রাজগ্রন্থশালা থেকে ১৯০৭খ্রিষ্ট্রাব্দে চর্যাপদ আবিস্কার করা হয়।

৮।          প্রঃ চর্যাপদ কবে, কোথা থেকে, কার সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়?

উঃ ১৯১৬খ্রিষ্টাব্দে (১৩২৩ বঃ) কলকাতার বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে চর্যাপদ আধুনিক লিপিতে প্রকাশিত হয়। এর সম্পাদনা করেন মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী।

৯।           প্রঃ চর্যাপদ কোন ভাষায় লেখা?

উঃ যদিও চর্যাপদ বাংলা ভাষার প্রথম গ্রন্থ, তবুও এখানে প্রাকৃত ও অপভ্রংশ স্তরের অনেক শব্দ পাওয়া যায়। সে জন্য আসামী, উড়িয়া, মৈথিলী বিভিন্ন ভাষার মানুষেরা চর্যাপদকে তাদের ভাষার গ্রন্থ দাবী করেন। তবে সুনীত কুমার চট্রোপধ্যায় তার ঙ.উ.ই.খ. গ্রন্থে প্রমাণ করেন যে চর্যাপদ বাংলা ভাষার প্রথম গ্রন্থ।

১০।        প্রঃ চর্যাপদের কয়টি অংশ ও কি কি?

উঃ চর্যাপদের মূল পান্ডুলিপির তিনটি অংশ। প্রথমটি ‘চর্যাচর্যবিনিশ্চয়’ বা খাঁটি বাংলা ভাষার কাছাকাছি। দ্বিতীয় অংশ হচ্ছে দোহা কোষ’ এবং তৃতীয় অংশ ‘ডার্কাণব’। ‘দোহা কোষ’ ও ‘ডার্কাণব’ অংশে অপভ্রংশ ভাষার প্রাধান্য বেশি।

 

১১।         প্রঃ চর্যাপদে কতজন পদকর্তা বা কবি আছেন?

উঃ চর্যাপদের পদকর্তা হচ্ছেন চব্বিশ জন।

১২।        প্রঃ কবিদের নামের সঙ্গে পা যুক্ত হয় কেন?

উঃ কবিরা পদ রচনা করেছেন বলে। পদ > পা।

১৩।        প্রঃ চর্যাপদে মোট পদের সংখ্যা কত?

উঃ চর্যাপদে মোট পদের সংখ্যা ৫১টি। তবে ১৯১৬ খ্রিষ্ট্রাব্দে বাংলা গ্রন্থাকারে প্রকাশকালে সাড়ে ছেচল্লিশটি পদ স্থান পায়।

১৪।        প্রঃ চর্যাপদে উল্লেখযোগ্য কবিরা কতটি পদ রচনা করেছেন?

উঃ সবচেয়ে বেশি পদ রচনা করেছেন কাহ্নপা-১৩টি। দ্বিতীয় ভুসুকুপা -৮টি এবং মহিলা কবি কুকুরীপা-২টি পদ রচনা করেছেন।

১৫।        প্রঃ চর্যাপদের গানের বৈশিষ্ট্য কি?

উঃ চর্যাপদ মূলত প্রাচীন গীতিকবিতা বা পদাবলী। যা কোন ছন্দে পাওয়া হবে তা প্রত্যেক পদের শুরুতে নির্দেশ করা আছে।

১৬।       প্রঃ চর্যাপদে কোন প্রবাদ বাক্য আছে কি?

উঃ চর্যাপদে কমপক্ষে ছয়টি প্রবাদ বাক্য আছে। যেমন -‘ আপনা মাংসেঁ হরিণা বৈরী’-ভুসুকুপা।

১৭।        প্রঃ চর্যাপদে কোন পদটি খন্ডিত আকারে পাওয়া যায়?

উঃ ২৩নং পদটি। এর ছয়টি পঙক্তি পাওয়া গেছে। বাকি ৪টি পঙক্তি পাওয়া যায়নি। এর রচয়িতা ভুসুকুপা।

১৮।        প্রঃ চর্যাপদের ভাষাকে কি বলে?

উঃ চর্যাপদের ভাষাকে বলা হয় ‘সান্ধ্য’ ভাষা বা ‘আলো আঁধারী ভাষা’।

১৯।        প্রঃ চর্যাপদে সমাজের কেমন চিত্র ফুটে উঠেছে?

উঃ রূপকের মাধ্যমে চর্যাপদে তৎকালীন সমাজ জীবনের কঠিন কঠোর চিত্র ফুটে উঠেছে।

২০।       প্রঃ চর্যাপদের সংস্কৃত টীকা ভাষ্যকারের নাম কি?  কত নম্বর পদের কোন টীকা ভাষ্য ছিল না?

উঃ চর্যাপদের সংস্কৃত টীকা ভাষ্যকারের নাম মুনি দত্ত। তিনি ১১নং পদটির কোন টীকা ভাষ্য বা ব্যাখ্যা দেননি।


Spread the love