পাহাড়ের হারিয়ে যাওয়া বনাঞ্চলকে পুনরুদ্ধারে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে বন্তব্য করেছেন প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী। তিনি বলেন, এ অঞ্চলের মানুষের জীবন ও জীবিকা টিকিয়ে রাখতে বনাঞ্চল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কিন্তু কিছু মানুষের উদাসীনতার কারণে বনাঞ্চল সংকচিত হচ্ছে। যার কারণে পার্বত্যাঞ্চলের জলবায়ুর উপর মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। ভূমি ধস হচ্ছে। ছড়া, ঝর্ণা ঝিরি শুকিয়ে যাচ্ছে। কাপ্তাই হ্রদের পানির উৎস কমে যাচ্ছে শুধুমাত্র বৃক্ষ নিধনের ফলে। তাই বনাঞ্চাল বাঁচিয়ে রাখতে হলে অপরিকল্পীত বৃক্ষ নিধন থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে। জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে পাহাড়বাসীর মধ্যে। তিনি সবাইকে বন রক্ষায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানান।
বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টায় রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের সম্মেলন কক্ষে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আরণ্যক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে রাইংক্ষিয়ং রিজার্ভ ফরেস্টের ল্যান্ডস্কেপ মডেলিয় ও ল্যান্য ইউজ প্লান সর্ম্পকিত এক কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী এসব কথা বলেন। রাঙামাটি অঞ্চলের বন সংরক্ষক মো. মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে আরণ্যক ফাউন্ডেশেনর নির্বাহী পরিচালক মো. রাকিবুল হাসান মুকুল, শাহ জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. স্বপন কুমার সরকার উপস্থিত ছিলেন।প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী আরও বলেন, সরকার বন অধিদপ্তরকে বন ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দিয়েছে। বন অধিদপ্তর কাউকে জমি বরাদ্দ দিতে পারে না। তবে যারা ইতিমধ্যে বনের ভেতর বসতি করেছে তাদের নিয়ে বন সুরক্ষায় কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা এক জরিপে দেখতে পেয়েছি রেইংক্ষিংয় রিজার্ভের ভূমিরূপ গত কয়েক দশকে বেশ পরিবর্তন হয়েছে। পানির উৎস ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ অঞ্চলে এখন ২টি ইউনিয়ন ২৮টি পাড়া আছে, যেখানে তিন হাজার পরিবারের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ এ রিজার্ভ ফরেস্টের উপর নির্ভরশীল। তাই সংঘটিত বনের অবক্ষয় বন্ধ করে বন পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা বেশ জটিল। তবে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করা গেলে বনাঞ্চল পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব।
দিনব্যাপী এ কর্মশালায় রাঙামাটির স্থানীয় হেডম্যান, কার্বারি, গণমাধ্যমকর্মী এবং বন বিভাগ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর, মৎস্য অধিদপ্তর, সমবায় অধিদপ্তর, কর্ণফুলী পেপার মিলস, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, মৃত্তিকা সম্পদ ইনস্টিটিউট ও হর্টিকালচার কেন্দ্রসহ বিভিন্ন বেসরকারি এনজিও সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
আপনার মতামত লিখুন :